September 8, 2014

দেখে আসুন কুলুমছড়া ঝর্ণা

সিলেট বেড়াতে গেলে একটা আফসোস প্রায় সবারই হয়। এত সুন্দর সব ঝর্ণা, বেশির ভাগই ভারতের সীমানায় পড়েছে। আমরা শুধু দূর থেকে দেখতে পাই। কুলুমছড়া ঝরনাটাও তেমনি। মেঘালয়ের পাহাড় থেকে শুরু হয়ে এ দেশে এসে ছড়া হয়ে গেছে।

সিলেট এখন পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য তাই সব জায়গায়ই বেজায় ভিড়। বৃষ্টির পানিতে ঝরনাগুলো এইসময় টইটম্বুর, তা দেখতেই মানুষের এই ছুটে আসা। সিলেট বলতে গেলে মেঘালয় পর্বতমালায় ঘেরা। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সোনার হাট সীমান্তবর্তী কুলুমছড়া একটি গ্রাম। এখানে ভারত সীমান্তের ঝরনাটিই কুলুমছড়া ঝরনা নামে পরিচিত। বৃষ্টি যত দিন থাকবে তত দিনই কুলুমছড়ায় বেড়ানো যাবে। অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত সাধারণত পানির প্রবাহ থাকে। কুলুমছড়া যাবার জন্যে সিলেট শহর থেকে চলে যান হাদারপার। 

সেখান থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে নিতে হবে। নৌকা চলতে শুরু করার ১০ মিনিটের মাথায় পৌঁছে যাবেন বিছনাকান্দি। বর্ষায় পিয়াইন নদীতে পানি থইথই থাকে। পানির ধারায় ভেসে আসা মাছের ঝাঁক ধরায় ব্যস্ত থাকে অনেক মানুষ। বিছনাকান্দি পেছনে ফেলে নৌকা নিয়ে এগিয়ে যান কুলুমছড়ার দিকে।

একসময় নিজেকে আবিষ্কার করবেন পৌঁছে গেছেন খোলা প্রান্তরে। আপনার গন্তব্য খুব কাছে বোঝাই যাচ্ছে। দেখুন পাহাড়ের প্রায় পাদদেশে চলে এসেছেন। চারপাশটা অসম্ভব সুন্দর। ঝরনার কুলকুল ধ্বনি কানে আসবে। এবার নৌকা ছেড়ে জংলাপথ ধরে হেঁটে চলুন। দেখবেন ঝরনার শব্দ প্রবল হচ্ছে ক্রমেই। ঝরনার পানি গড়িয়ে বাংলাদেশ প্রান্তে আছড়ে পড়ছে। 

এখানে ঝরনার পানিতে স্রোত খুব বেশি, একই অবস্থা বাংলাদেশ প্রান্তে ছড়ার। সুতরাং এখানে এলে এবং গোসলের সময় সাবধান থাকতে হবে। এখানে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ, অর্কিড, ভেষজ গাছ-গাছড়ার দেখা পাবেন। কুলুমছড়া ঝরনা দেখার জন্য সকাল সকাল যাওয়াই ভালো। আর সন্ধ্যার আগেই ফেরত আসা উচিত। কেননা, এখানে চড়াই ভাঙতে দম ফুরিয়ে যাবে। আর সীমান্ত এলাকা বলে দিনের আলো ফুরিয়ে আসার আগেই ফিরে আসুন। ঝরনার গভীরে না যাওয়াই ভালো।


কীভাবে যাবেনঃ
কুলুমছড়া বেড়ানোর মোক্ষম সময় আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস। ঢাকা-সিলেট দিনরাত বাস চলাচল থাকে। যেকোনো বাসে চড়ে বসলেই হলো। তবে সন্ধ্যার বাসে যাত্রা শুরু করলে রাতটুকু বিশ্রাম পাবেন। পরদিন সকাল সকাল কুলুমছড়া যাত্রা করুন। এমন ভ্রমণ দলবেঁধে করাই ভালো। সিলেট শহর থেকে হাঁদারপার আপনার বাহন হবে লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস। হাঁদারপারে মোটামুটি মানের খাবার ব্যবস্থা আছে। খাবার খেয়ে, নৌকার ভাড়া চুকিয়ে তবেই নৌকায় উঠুন। রাত্রিযাপনের জন্য আপনাকে সিলেট শহরের ওপরই নির্ভর করতে হবে। এখন সিলেটে পর্যটক খুব বেিশ। সুতরাং যাত্রার শুরুতে হোটেল বুকিং দিয়ে রওনা হতে হবে। মিরাবাজার, জিন্দাবাজার বা দরগাগেটে ভালো মানের হোটেল রয়েছে। আপনি সিলেট শহরকে কেন্দ্রবিন্দু করে কুলুমছড়াসহ সিলেটের অন্যান্য দর্শনীয় সবগুলো জায়গাই ঘুরে আসতে পারবেন।

আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করতে ক্লিক করুনঃ https://www.facebook.com/discover.our.bangladesh

No comments:

Post a Comment